Sunday, March 7, 2021

বিজেপিতে এমএলএ ফাটাকেষ্ট, তবে কি মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী মিঠুন চক্রবর্তী জল্পনা তুঙ্গে

 নিজস্ব প্রতিবেদক; নিউজ কলরব: রুপোলি পর্দার এমএলএ ফাটাকেষ্ট ও বলিউডের সুপারস্টার বাঙালি বাবু মিঠুন চক্রবর্তী কে নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক জল্পনা চলছিল বিভিন্ন মহলে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় রুপোলি পর্দার তারকাদের রাজনৈতিক দলে যোগদানের হিড়িক পড়েছে। তবে মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজনৈতিক সংযোগ অনেক আগে থেকে থাকলেও নতুন করে শুরু হয়েছিল জল্পনা।

বিজেপির বিভিন্ন নেতাদের মুখে শোনা যাচ্ছিল বাংলায় চমক রয়েছ। রবিবার সমস্ত চমক ও জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভায় সরাসরি বিজেপিতে যোগদান করলেন মিঠুন চক্রবর্তী। দিন কয়েক আগেই আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বম্বে মিঠুন চক্রবর্তীর বাসভবনে দেখা করেন, তারপর থেকেই জল্পনা চলছিল তবে কি মিঠুন দা গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাচ্ছেন? সেই বিস্ময় আপাতত শেষ, শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা। পশ্চিমবঙ্গে পদ্ম শিবিরের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে ভেসে আসছিল বিভিন্ন তারকার নাম। কখনো ক্রিকেটের মহারাজ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আবার কখনো প্রসেনজিতের মত তারকাদের নাম। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আপাতত জানিয়ে দিয়েছেন রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন না।  রবিবার মিঠুন চক্রবর্তীর পদ্ম শিবিরে নাম লেখানোয় জোর জল্পনা শুরু হয়েছে তবে কি বিজেপির  মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে চলেছেন মিঠুনদা? এদিন ব্রিগেডের সভায় বাংলা সিনেমার একাধিক ডায়ালগ শোনা গেল মিঠুন চক্রবর্তীর মুখে। এখনো তিনি সিনেমার ডায়লগের ঢঙে বলেন, "আমি জল জলঢোঁড়াও নই, বেলে বোরাও নই, আমি একটা জাত গোখরো, এক ছোবলেই ছবি" আবার কখনো বলতে শোনা যায় ফাটাকেষ্টর ডায়লগ "মারবো এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে"।



মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ নতুন নয়। রবিবার বিজেপিতে যোগদান তার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন বলে অনেকে মনে করছেন।

সময়ের সাথে সাথে রাজনৈতিক হওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে পাল্টে ফেলেছেন বাঙালি বাবু। একটা সময় বাম আমলে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও সিপিএম মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ঘনিষ্ঠ। সেই সময় সুভাষ চক্রবর্তীর হয়ে ভোট প্রচারেও দেখা যায় মিঠুনচ ক্রবর্তীকে। সুভাষ চক্রবর্তীর প্রায়াণের পর দূরত্ব বাড়তে থাকে বামেদের সঙ্গে। একটা সময় দূরত্ব এতটাই বেড়ে যে রাজ্যের পরিবর্তনের পর বাম পাল্টে ডান রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে। ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে জোড়া ফুলের বিভিন্ন প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতেও দেখা যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে। এই বছরই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সংসদ মনোনীত হন মিঠুন। তারপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন তিনি। কিন্তু ২০১৬ সালে সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোই রাজনীতি থেকে বীতশ্রদ্ধ হয়ে সরে দাঁড়ান রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে। এরপর লাইমলাইট থেকে কিছুটা হলেও দূরে সরে যান মিঠুন চক্রবর্তী। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝে মাঝে আরএসএস প্রধানের সাথে সাক্ষাতে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয় আবার।



রবিবার ব্রিগেডে বাঙালি আবেগকে উস্কে দিয়ে ধুতি-পাঞ্জাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সভা মঞ্চে দেখা যায় মিঠুনকে। একদিকে যখন শাসকদল বাংলা নিজের মেয়েকে চাই প্রচার চালাচ্ছে তখন ব্রিগেডের সভা মঞ্চে বাংলার ছেলে মিঠুন চক্রবর্তী বলে সংবর্ধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন বিজিপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গী ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত ধরে বিজেপির পতাকা তুলে নেন মিঠুন। এদিনের ব্রিগেডের সভায় বাংলা বলতে বলতে মাঝেমধ্যেই হিন্দিতে কথা বলতে দেখা যায় মহাগুরুকে। তবে কাদেরকে খুশি করতে হিন্দি সে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নেটিজেনরা? ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল হতে শুরু করেছেন মিঠুন। কেউ বলছেন জাত কোবরা নও গিরগিটি, কেউ আবার বলছেন পাল্টিবাজ, তো কেউ দালাল। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে একটাই জল্পনা বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তবে কি মিঠুন। সেটা হলে জমে উঠবে বঙ্গের ভোট লড়াই,  দাদা বনাম দিদির লড়াই হবে কিনা সময়ই বলবে সে কথা, তবে আপাতত উৎসাহি আমজনতা সে দিকেই তাকিয়ে।

No comments:

Post a Comment