Saturday, July 25, 2020

পলাশীপাড়ার বাউর গ্রামে মানুষের দুর্ভোগ এলাকায় সেতুর দাবি


তৌসিফ মণ্ডল; কালীগঞ্জ(নদীয়া)ঃ ভোট আসে ভোট যায় প্রতিবার মেলে প্রতিশ্রুতি কিন্তু বদলায় না বাউর চক সাটিখালি গ্রামের পরিস্থিতি।নদীয়ার পলাশীপাড়া বাউর গ্রামে চকপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরেই মানুষ সেতুর দাবি করে আসছেন চক সাটিখালি খালের উপর।এই খালটি বিচ্ছিন্ন করেছে গ্রামের একটি অংশ এবং আশেপাশের প্রায় দশটি গ্রামকে।দুপাশে রয়েছে পাকা রাস্তা মাঝে এই খাল।বাউর-পলাশীপাড়ার সঙ্গে পলশুন্ডা-বারুইপাড়া-বার্নিয়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের সংযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এই এলাকা স্কুল থেকে শুরু করে হাট বাজার, কুটুম্ব সাক্ষাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ নিত্যদিন এই রাস্তাটি দিয়ে পারাপার করে থাকে বাচ্চা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, মহিলা সবাই এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে হাঁটুজল অতিক্রম করে যাতায়াত করে  আসছেন বছরের প্রায় বেশিরভাগ সময়েই এমন দুর্ভোগের শিকার হন গ্রামবাসীরা বর্ষাকালে এর অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে ওঠেসে সময়ে বাঁশের তৈরি সাঁকো করে রাস্তা পারাপার করা বাচ্চা এবং বৃদ্ধদের পক্ষে খুবই বিপদজ্জনক হয়ে ওঠে

এলাকার মানুষের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসন ও রাজনোইতিক নেতাদের কাছে সেতুর দাবি তুললেও জুটেছে শুধুই প্রতিশ্রুতি। প্রায় বছর ভর জমে থাকে জল এর ফলে নিত্যদিন সমস্যায় পড়তে হয় মানুষকে। পারাপার করতে গেলে ভাঙতে হয় কত হাঁটুজল।প্রতিবছর বর্ষার নতুন করে আবার দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকার মানুষকে।জল বাড়ার সাথে সাথে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী সাঁকো বানিয়ে কোনরকমে ঝুঁকি নিয়ে চলে যাতায়াত। তারপর জল কমলে বছরভর পেরোতে হয় হাঁটুজল মাড়াতে হয় কাদা বিশেষ করে সমস্যায় পড়েন বয়স্ক মানুষ বাচ্চারাএই সমস্যার কোনো সুরাহা নেই বলে স্থানীয় মানুষ মনে করছেন।
স্থানীয় গৃহবধূ শাহিনুর বিবি বলেন, বছর ভরে জল জমে থাকে পুরুষ মানুষের কাপড় তুলে যাতায়াত করে মহিলাদের ক্ষেত্রে বিষয়টা আরো সমস্যার। তাছাড়া বাচ্চা ছেলেরা স্কুলে যাতায়াত করে তাদেরকে একা ছাড়তে ভয় পায়।যেকোন সময় যেকোন ধরণের বিপদও হতে পারে। সরকারের বিষয়ে নজর দিলে এলাকার মানুষের উপকার হয়।আজিউর মন্ডল নামে এক ব্যক্তি বলেন সরকার মেম্বার প্রধান সবাই ঘোরাঘুরি করছে। হবে হবে শুনছি ৪০ বছর ধরে এখনো কিছুই হলো না। দীর্ঘদিন ধরে মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, সাইকেল কাঁধে, বাচ্চা কোলে নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। মোটরসাইকেল থাকলে আরো সমস্যা। অনেক সময় ওপার থেকে মানুষ আসে রাস্তা খারাপ দেখে বাধ্য হয়ে আবার তাকে ঘুরে যেতে হয় পাঁচ-সাত কিলোমিটার এই সমস্যা থেকে আমরা কবে মুক্তি পাব জানিনা।
আরফত মন্ডল নামে এক প্রবীণ বলেন আমরা জন্ম থেকে দেখে আসছি এভাবে পারাপার হচ্ছে। আগে এই এলাকায় সেভাবে বসতি না থাকলেও এখন বসতি বেড়েছে এবং দুই ধারে পাকা রাস্তা হয়েছে মাঝখানে ফাঁকা। দশখান গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। এবছর বর্ষা হয়নি বর্ষা হলে কষ্টো আরো বারে।সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের এই বিষয়টি দেখার জন্য।
এমনকি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যরা রাস্তা দিয়ে জল মাড়িয়ে যায় কিন্তু তাতেও তাদের কোনো হেলদোল নেই।  পলাশীপাড়া পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য আকতার আলী মন্ডল বলেন, আমরা বিষয়ে বিভিন্ন মহলে জানিয়েছি, এমএলএকে জানিয়েছি, এমপি কে জানিয়েছি, পার্টির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, কিন্তু কোন সমস্যা সমাধান হয়নি। বর্ষা আসলে সমস্যা বাড়ে আমরা নিজেরাই বাঁশ দিয়ে মিস্ত্রি খরচা দিয়ে কোনরকমে সাঁকো বানায় আমরা চাই সরকার খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিক।
বিষয়ে পলাশীপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রণদা প্রসাদ বোস বলেন, বাউর চক সাটিখালি পাড়ায় সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে আছে। আমাদের নজর আছে বিষয়টি।আমাদের পঞ্চায়েত  এবং পঞ্চায়েতের সমিতির পক্ষ থেকে এত বড় প্রকল্প করা সম্ভব নয়   বিষয়ে আমরা বিধায়ক কে জানিয়েছি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জানানো হয়েছে। তাছাড়া আমরা দিদিকেবলো কর্মসূচিতে যখন ওখানে গিয়েছিলাম ওখানকার মানুষ ব্রিজের দাবি তোলে। আশা করছি খুব দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পলাশীপাড়া বিধানসভার বিধায়ক তাপস সাহা বলেন, বাউর গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের ঘটনা সত্যি। ওই দীর্ঘদিন ধরে মানুষ সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। বিষয়ে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি আমাদের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কে জানিয়েছি। সামনেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিং আছে তখন দিদিকে এ বিষয়ে আমি জানাবো আশা করছি খুব দ্রুত ওখানে আমরা কাজ শুরু করতে পারব।
পলাশীপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার অন্যতম বড় গ্রাম এই বাঊর গ্রাম পাঁচ জন সদস্য রয়েছেন গ্রামে এবং এর আগেও এই গ্রাম থেকেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন বাম আমলে তখনও কিছু হয়নি, রাজ্যে পটপরিবর্তনের পরেও বদলায়নি ছবি।বর্তমানে গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত, এমএলএ, এমপি সবই শাসক দলেরপ্রশাসন ও শাসক দলের নেতেদের বিভিন্ন মহলের বরাবরই দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও  মিলে এসেছে শুধুই আশ্বাসআসলে এই গ্রাম নিয়ে সরকারের কোনো নজর নেই বলে আফশোষ গ্রামবাসীদের।

No comments:

Post a Comment